Are Entrepreneurs Born or Made ?
Entrepreneur বা উদ্যোক্তা এখন সারা বিশ্বে বহুল পরিচিত একটি বিষয়। একটি সময় ছিল যখন সকলে শুধু মাত্র চাকরী করার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করতো আর এখন ধীরে ধীরে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছে চাকরী করার পরিবর্তে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করার। যারা সঠিক ভাবে তাদের সকল গুণাবলী ও পরিকল্পনাকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, তারা ঠিকই উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হচ্ছে এবং সেই সাথে অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করছে উদ্যোক্তা হবার প্রতি। এখন এত কিছু দেখার পরে আমাদের মনে একটি প্রশ্ন কিন্তু উঁকি দিতেই পারে, আর সেটি হচ্ছে উদ্যোক্তা কি জন্মগত ভাবে হওয়া যায়, নাকি একজন মানুষকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরী করা যায়? সঠিক উত্তরটি হচ্ছে উভয়ই। অর্থাৎ উদ্যোক্তা হবার গুণাবলী জন্মগত ভাবেই কেউ অর্জন করতে পারে আবার পরবর্তিতে অনুশীলন, চেষ্টা ও পরিশ্রমের মাধ্যমেও উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব ।
Entrepreneurial Qualities from Childhood
আমরা জানি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ একে অপরের থেকে আলাদা। তারা সকলেই তাদের কিছু নিজস্ব গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। একটি শিশুর জন্মের পর আমরা যদি একটু গভীর ভাবে তার গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য গুলো লক্ষ্য করি তাহলে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারবো যে এই শিশুটির দ্বারা উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব কিনা। উদ্যোক্তা হবার জন্য প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কঠোর পরিশ্রম ছাড়াও কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। এই বৈশিষ্ট্য গুলো যদি না থাকে তবে শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম দ্বারা কেউ কখনো সফল উদ্যোক্তা হতে পারবে না।
যেমন, কিছু কিছু বাচ্চা আছে যারা ছোট বেলা থেকেই কঠোর পরিশ্রমী। তারা প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম করতে পারে। তারা কখনো অলস হয় না। তারা কখনো কোন কাজে অজুহাত দেয় না। কাজটি যত কঠিনই হোক না কেন তারা চেষ্টা করে সেটিকে সম্পন্ন করার। তারা যদি কোন কাজ শুরু করে, তবে সেটা শেষ করেই তবে ছাড়ে অর্থাৎ তারা হারতে জানে না। যদি কোন কারণে তারা ব্যর্থ হয় তবে তারা সেটাকে হার হিসেবে না দেখে বরং একটি শিক্ষা হিসেবে নিয়ে পরিবর্তীতে আরো উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে যায়। তারা কাউকে কোন কথা দিলে, কথা রাখে।
অনেক বাচ্চারাই আছে যাদের কাছে কথা দিয়ে কথা রাখাটা অনেকটাই আত্মসম্মান রক্ষার মত। তারা এটাকে অনেক বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তারা অনেক ধৈর্যশীল হয়। যে কোন কাজ করতে গিয়ে তারা কখনো অস্থির হয় না। তাদের মধ্যে অনেক কৌতূহল থাকে। প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন বিষয় জানার জন্য তারা অনবরত প্রশ্ন করে। নানান জিনিস ও বিষয় নিয়ে তারা নিজেরাই গবেষণা করে। অনেক বাচ্চারাই আছে যাদের মধ্যে Leadership বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। তারা যে কোন বিষয়ে নিজ থেকে আগ বাড়িয়ে যোগদান করে ও চেষ্টা করে সেটার পুরো কতৃত্ব ও আকর্ষণ নিজের প্রতি নিয়ে নিতে। তাদের মনমানসিকতাই থাকে মানুষকে সাহায্য করার। কিছু কিছু বাচ্চারা আছে যারা চিন্তা ভাবনা করে কাজ করতে পছন্দ করে। তারা কখনো হুট করে কোন কাজ করে না বা সিদ্ধান্ত নেয় না। তাদের কাছে কোন টাকা থাকলে সেটাকে তারা বেহিসাবী খরচ না করে প্ল্যান অনুযায়ী ব্যয় করে। মোটকথা, এতক্ষণ বাচ্চাদের যে সকল গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করা হলো, এগুলো যদি কোন বাচ্চার মধ্যে দেখা যায় তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে সেই বাচ্চাটি বড় হয়ে কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক পরিকল্পনা দ্বারা একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।
Role of Parent
বাচ্চাদের এই ভবিষ্যত ক্যারিয়ার গঠন সম্পর্কে বাবা মায়েদের অনেক বড় একটি ভূমিকা রয়েছে। বাবা মায়েরা যদি ছোটবেলা থেকেই তাদের বাচ্চাদের এ সকল গুণাবলীকে খুব মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করে তবে তারা খুব সহজেই বুঝতে পারবে যে তাদের বাচ্চাটি বড় হয়ে কোন পেশায় নিজের ক্যারিয়ার ভাল ভাবে গড়ে তুলতে পারবে। ছোটবেলা থেকেই যদি বাচ্চাদের মধ্যে থাকা এই বিশেষ গুণাবলীকে আরো বেশী করে যত্ন করা যায়, তাহলে সেগুলোকে আরো বিকশিত করা সম্ভব। পাশাপাশি যে সকল বাচ্চাদের মধ্যে এই গুণাবলীগুলো নেই, তাদের বাবা মায়েরা যদি সেই বাচ্চাদেরকে সঠিক ভাবে যত্ন ও দিকনির্দেশনা দেয় তবে সেই বাচ্চারাও বাবা মায়ের সহযোগিতায় নিজের চেষ্টার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হবার এই গুণগুলো নিজের মধ্যে তৈরী করে নিতে সক্ষম হবে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে একটি শিশু উদ্যোক্তা হিসেবে জন্ম নিক বা নাই নিক, তাকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার পিছনে ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের সর্বদাই একটি মুখ্য ভূমিকা রয়েছে।
Those Are Not Born Entrepreneur
আমরা বলতে পারি, প্রায় ৮০% মানুষ জন্ম থেকেই উদ্যোক্তা হবার গুণাবলী নিয়ে বড় হয় বলেই তারা তাদের পরিশ্রম দ্বারা উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হতে পারে। আর বাকি ২০% মানুষ তারা নিজ চেষ্টা ও ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের চেষ্টার মাধ্যমে নিজের মধ্যে এই গুণাবলীগুলোকে জন্ম দেবার মাধ্যমে কঠোর পরিশ্রম দ্বারা একজন সফল উদ্যোক্তা হতে সক্ষম হয়। আর এ ধরণের মানুষের উদ্যোক্তা হবার পিছনে সব থেকে বড় ভূমিকা পালন করে নিজের অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও শক্ত মনোবল। কারণ এ ধরণের মানুষদের অধিকাংশরই আগ্রহ থাকে চাকরী করার প্রতি কারণ তারা একটু ঝুঁকিহীন, নিশ্চিন্ত ও আরামদায়ক জীবনযাপন করতে চায়। আর এদের মধ্যেই যারা একটু ভিন্ন পথে হাঁটতে চায়, তারা সিদ্ধান্ত নেয় উদ্যোক্তা হবার বা ব্যবসা করার। অতঃপর তখন তারা এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয় নিজের চিরাচরিত বৈশিষ্ট্যগুলোকে ভেঙ্গে নিজেকে নতুন ভাবে গড়ে তোলার। যারা সফল হয় একমাত্র তারাই হতে পারে উদ্যোক্তা হতে, নয়তো ব্যবসাতো অনেক মানুষই শুরু করে কিন্তু তাদের সকলেই কি আর সফলতার মুখ দেখতে পারে?
Hard Work & Proper Plan
সুতরাং এ থেকে স্পষ্ট যে উদ্যোক্তা দুই ভাবেই হওয়া যায়, জন্মগত ভাবেও এবং নিজ চেষ্টার মাধ্যমেও। তবে একজন মানুষ যেভাবেই উদ্যোক্তা হোক না কেন, একটি বিষয় ছাড়া সে কখনই উদ্যোক্তা হতে পারবে না আর সেটি হলো কঠোর পরিশ্রম ও একটি সঠিক পরিকল্পনা। যে কোন পেশায়, যে কোন ব্যবসায় যে কোন মানুষের সফলতার মূল চাবিকাঠিই হচ্ছে এটি। একটি মানুষের সব ধরণের গুণাবলী থাক বা না থাক কঠোর পরিশ্রম ও পরিকল্পনা ছাড়া আজ পর্যন্ত কেউ কোন দিন সফল হতে পারেনি ও কোন দিন পারবেও না।