জীবনে যে কোন কাজে সফল হবার কার্যকরী দিক নির্দেশনা (As Per My Knowledge)
০১। নিজের শক্তি ও দুর্বলতা গুলোকে জানুন –
যে কোন কাজে সফল হতে হলে আগে নিজের মধ্যে ঐ কাজটি সম্পর্কিত দক্ষতা গুলোকে খুঁজে বের করতে হবে। সঠিক দক্ষতাটাকে যদি খুঁজে বের করে কাজ লাগানো না যায় তবে কখনই সেই কাজটি সফল ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি নিজের দুর্বলতা গুলোকে জেনে বুঝে তবেই কাজে নামা উচিত যেন সেই দূর্বলতা গুলো কাজের মধ্যে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে। সব থেকে ভাল হয় যদি সেই দূর্বলতা গুলোকে কাটিয়ে ওঠা যায়।
০২। দক্ষতা গুলোকে সঠিক ভাবে কাজে লাগান –
আপনার যে দক্ষতা গুলো আছে, সেগুলোকে সঠিক জায়গায় কাজে লাগান। সর্বদা মাথায় রাখুন যে কিভাবে আপনার দক্ষতা গুলোর বিনিময়ে মুনাফা অর্জন করা যায়। যে কোন কাজ বা ব্যবসায় মুনাফা অর্জন সব থেকে বড় সফলতা। মুনাফা ব্যতিত বিনিয়োগের কোন মুল্যই নেই। তাই নিজের দক্ষতা, সময়, অর্থ ও পরিশ্রমকে এমন ভাবে এমন জায়গায় বিনিয়োগ করুন যেখানে সেগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার দ্বিগুণ মুনাফা বের করে আনতে পারেন।
০৩। নিজের কাজের প্রতি ফোকাস করুন –
যখন যে কাজটি করবেন সেটা কাজ হোক বা ব্যবসা, সম্পূর্ণ ফোকাস সেই কাজের প্রতিই দেয়া উচিত। কোন ধরণের প্রতিবন্ধকতাকে সামনে আসতে দেয়া উচিত নয় যা কাজের প্রতি ফোকাসকে নষ্ট করে দেয়। যেমন কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে একজন ব্যবসায়ীর সর্বদা ফোকাস থাকা উচিত তার পণ্য, তার কর্মী, তার কর্মক্ষেত্র, তার কাস্টোমার এবং সর্বপরি কিভাবে মুনাফা অর্জন করা যায় তার উপর। এই ফোকাসই একজন ব্যক্তিকে যে কোন কাজে সফল হতে সহায়তা করে।
০৪। ঝুঁকি নেওয়ার সাহস করুন –
আমরা সবাই জানি No Risk, No Gain। জীবনে সফলতা কখনো হেসে খেলে অর্জন করা সম্ভব নয়। এর জন্য মাঝে মাঝে প্রয়োজন ঝুঁকি নেয়া। সেই ঝুঁকি যে কোন ভাবে হতে পারে। শারীরিক দক্ষতা, আর্থিক বিনিয়োগ, কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ যেকোন জায়গাতেই ঝুঁকি নেবার মত সাহস, মনোবল ও আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। তবেই সফলতার যাত্রা শুরু করা সম্ভব হবে।
০৫। নিজের একটি ব্র্যান্ড তৈরী করুন –
মানুষ কখনো কোন কাজ়ে একা একা সফল হতে পারে না। এর জন্য তাকে তার চারপাশের নানান সেক্টরের মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নেবার প্রয়োজন হয়। আর মানুষেরা সব সময় তাকেই সাহায্য করে যাকে তারা বিশ্বাস করে এবং যে একটি ব্র্যান্ড তৈরীর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে তার খ্যাতি, সততা ও পরিচয় ছড়িয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগে নিজের কাজ ও মার্কেটিং দ্বারা সকলের সামনে নিজেকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রমাণ করতে হবে যেন যে কোন প্রয়োজনে সকলকে পাশে পাওয়া যায়।
০৬। দূরদর্শী পরিকল্পনা করতে শিখুন –
যে কোন কাজ শুরুর আগে সর্বদা দূরদর্শী পরিকল্পনা সাজাতে হবে। আগে থেকেই ভেবে দেখতে হবে যে কাজটির কি কি ধরণের নেগেটিভ ও পজিটিভ ফলাফল আসতে পারে এবং সেই অনুযায়ী সকল প্রকার ব্যবস্থা দ্বারা নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। দূরদর্শীতা ছাড়া কোন কাজেই বিশেষ করে ব্যবসায় কখনো সফলতা লাভ করা যায় না।
০৭। দ্বায়িত্ব নিতে শিখুন –
যেকোন কাজে সফলতার একটি অন্যতম গুণ হচ্ছে দ্বায়িত্বশীলতা। কোন একটি কাজ শুরু করলে তা দ্বায়িত্বশীলতার সাথেই শুরু করা উচিত এবং সেই অনুযায়ী সফল ভাবে শেষ করা উচিত। যতক্ষণ না পর্যন্ত কাজটি শেষ হচ্ছে দ্বায়িত্ব রয়ে যায়। তাই কাজটি শেষ করে সেখান থেকে একটি কাংক্ষিত ফলাফল বের করে নিয়ে আসাটাই প্রকৃত দ্বায়িত্বশীলতার উদাহরণ।
০৮। দায়বদ্বতাগুলি নিতে শিখুন –
প্রতিটি কাজের দ্বায়িত্ব নেবার পাশাপাশি কাজের দ্বায়বদ্ধতা গুলোও নিতে হবে। অনেকে আছে কাজের সফলতার ক্রেডিট নেয় কিন্তু কাজের ব্যর্থতার কোন ক্রেডিট নিতে চায় না বরং অন্যের উপর সেটা চাপানোর চেষ্টা করে। তাই একজন প্রকৃত দ্বায়িত্বশীল মানুষের কাজ হচ্ছে তার যে কোন কাজের সকল প্রকার দায়ভার নিয়ে সেটাকে সম্পন্ন করা। যদি কাজটি ব্যর্থ হয় তবে সেই ব্যর্থতার পিছনের কারণ গুলোকে খুঁজে বের করে সেগুলোকে সমাধান করাও তার দায়বদ্ধতার মধ্যেই পড়ে।
০৯। বিনিয়োগের আগে সেভিংস করতে শিখুন –
অনেকেই মনে করেন টাকা মানেই হচ্ছে সেটা খরচের জন্য। এ ধরনের মানুষেরা জীবনে যত টাকাই আয় করুন না কেন সেই টাকা তারা ধরে রাখতে পারে না। টাকা ধরে রেখে সেখান থেকে আরো টাকা তৈরি করাও একটি বড় দক্ষতা। এই দক্ষতাটি যার মধ্যে আছে সেই পারে অনেক বড় ও সফল ব্যবসায়ী হতে। একজন সফল ব্যবসায়ী জানে তার টাকা গুলোকে কিভাবে সেভ করে রাখা যায় যেন সেগুলো সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে কাজে লাগানো যায়। তাই এই দক্ষতাটি অর্জন করতে শিখুন, জীবনে যে কোন পর্যায়ে এটি আপনাকে সুবিধা প্রদান করবে।
১০। মুনাফা গুলোকে কাজে লাগান –
ব্যবসা হতে প্রাপ্ত মুনাফা গুলোকে চেষ্টা করুন পুনরায় ব্যবসায় কাজেই বিনিয়োগ করতে। এটি আপনাকে সাহায্য করবে আপনার ব্যবসাকে আরো বৃদ্ধি করতে। ব্যবসা যত বৃদ্ধি হবে মুনাফা আয়ের পরিমাণও ততই বাড়বে। সেই সাথে বিনিয়োগের সুযোগও আরো বৃদ্ধি হবে। এই চক্রটি সঠিকভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমেই যেকোন ব্যবসায় সফলতা অর্জন সম্ভব।
১১। যে কোন শর্টকাট পথ পরিহার করুন –
এই পৃথিবীর প্রতিটি সেক্টরেই কিছু নিয়ম কানুন ও বিধি বিধান রয়েছে। তাই যেকোন কাজ করতে গেলে সর্বদা নিয়ম কানুন মেনেই আর সকলের সফলতার পথ অনুসরন করেই এগিয়ে যেতে হবে। কোন ধরনের ছল চাতুরী বা অসততার পথ বেছে নিলে জীবনে শুধু প্রতিবন্ধকতাই আসবে যা সফলতাকে বার বার বাধাগ্রস্ত করবে। তাই সফল হতে গেলে সফল হবার সৎ পথকেই মেনে চলতে হবে। অন্য কোন বিকল্প পথে যাওয়া যাবে না। এক কথায় বলতে গেলে সফলতার কোন শর্টকাট নেই। যত কষ্টই হোক না কেন মনে রাখতে হবে যে শর্টকার্ট পথের ভবিষ্যত কখনো সফল হয় না।