Employability for Future Generation
আজকের এই যুগে পৃথিবীতে যোগ্যতার সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হলে সব থেকে বেশী যে জিনিসটি দরকার সেটি হচ্ছে Skill বা দক্ষতা। একটি সময় ছিল যখন বিভিন্ন কোম্পানীতে চাকরীর বাজারে সার্টিফিকেটের মুল্যায়ন ছিল কারণ তখন প্রতি বছর হাতে গোণা কিছু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভাল রেজাল্ট করতো এবং বিভিন্ন কোম্পানীতেও চাকরীর বাজারে এগিয়ে থাকতো তারাই। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থারও আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন এই প্রযুক্তির এই যুগে পড়ালেখা শুধু মাত্র পাঠ্যপুস্তকের মাঝেই সীমাবদ্ধ নেই। এখন ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নানান রকম Platform উন্মুক্ত হয়ে গেছে শিক্ষা গ্রহণের জন্য যার কারণে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভাল রেজাল্ট নিয়ে বের হচ্ছে কিন্তু এত সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সারা দেশে তৈরী হচ্ছে না। যেহেতু সকলের হাতেই এখন ভাল রেজাল্ট ও গ্রেডের সার্টিফিকেট তাই বিভিন্ন কোম্পানী এখন শুধু মাত্র তাদেরকেই চাকরী বাজারে বেছে নিচ্ছে যাদের মাঝে সঠিক কর্ম দক্ষতা আছে। যার কারণে শুধু ভাল রেজাল্টের বদৌলতে এখন আর চাকরী বাজারে কেউ এগিয়ে থাকতে পারছে না। যার Skill বা কর্মদক্ষতা আছে, সেই পেয়ে যাচ্ছে তার কাংক্ষিত চাকরীর সুযোগ।
কিন্তু এতকিছুর পরেও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সার্টিফিকেট কেন্দ্রীক পড়াশোনা পরিহার ও নিজেদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যার কারণে আজও প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী গ্রাজুয়েশন শেষে বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে একটি সময় আমাদের এই দেশের ভবিষ্যত বলে আর কিছুই থাকবে না কারণ আজকের এই তরুণ সমাজ যারা আমাদের দেশের আগামীর ভবিষ্যত, তারা যদি অদক্ষ হয় এবং শুধু মাত্র সার্টিফিকেটের জোরে চাকরীর আশায় বসে থাকে তবে এদের দ্বারা কোন দিনই দেশের কোন উন্নতি সাধন হবে না। তাই আমাদেরকে ভাবতে হবে কিভাবে আমাদের ভবিষ্যত জেনারেশনকে এই ধ্যান-ধারনা থেকে বের করে নিয়ে এসে তাদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত তৈরী করা যায়। আর এই জন্য সব থেকে বেশী জরুরী এই যুগের বাবা-মায়েদের সচেতনতা। এখন যারা বাবা-মা আছেন বা যারা সামনে বাবা-মা হতে যাচ্ছেন তাদের উচিত তাদের সন্তান বা অনাগত সন্তানদের জন্য আগে থেকেই একটি ক্যারিয়ার প্ল্যানিং তৈরী করে রাখা। আমাদের দেশে প্রতিটি বাবা-মা তাদের সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই আরামদায়ক ও অনুকূল পরিবেশে বড় করতে চায় যেন তাদের সন্তানেরা কষ্টে না থাকে কিন্তু তারা জানে না, এতে করে তারা তাদের সন্তানদেরকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে দূর্বল করে গড়ে তুলছে যার কারণে সেই ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে কোন প্রতিকূল পরিবেশে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে টিকে থাকতে পারে না। আর এই ছেলে-মেয়েরাই একটি সময় সার্টিফিকেট কেন্দ্রীক পড়াশোনার প্রতি ঝুকে পড়ে এবং নিজেদের Skill Development কোন আগ্রহ দেখায় না যার ফলশ্রুতীতে তাদের অধিকাংশদেরকেই চাকরীর বাজারে বেকার হয়ে বসে থাকতে হয়।
সুতরাং এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে হলে এখন থেকেই বাবা-মায়েদের উচিত ছোটবেলা থেকেই তাদের সন্তানদেরকে নানান রকম ক্রিয়েটিভ দিকে আগ্রহী করে তাদের সবক রকম Skill Develop করা। একটি শিশু যদি ছোটবেলা থেকেই একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে থাকে তবে বড় হয়ে সে ঐ বিষয়ে একজন Expert এ পরিণত হবে এবং তার থেকে ভাল আর কেউ ঐ বিষয়ে কাজ দেখাতে পারবে না। তাই কোন বাবা-মা যদি প্ল্যান করে যে তারা তাদের সন্তানকে কোন Career Field এ দেখতে চায় তবে তাদের উচিত ছোট বেলা থেকেই তাকে সেই ক্যারিয়ার বিষয়ক জ্ঞান ও চ্যালেঞ্জ দ্বারা গড়ে তোলা তাহলে সেই ছেলে/মেয়েটিকে বড় হয়ে চাকরী নিয়ে কখনো ভাবতে হবে না। চাকরী নিজে এসে তাকে খুঁজে নেবে কারণ সবাই Expertদেরকেই চায় কাজে লাগাতে আর আগামী যুগটি থাকবে Expertদেরই হাতে। যে যত বেশী Skillful ও Expert হবে, চাকরী বাজারে তার Demand থাকবে সব থেকে বেশী। তাই আগে থেকে বাবা-মায়েদের সচেতনতা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে যদি এমন একটি দক্ষ জেনারেশন তৈরী করা যায় তবে সেই জেনারেশনটিই পারবে একদিন দক্ষ হাতে এ দেশ ও জাতির হাল ধরতে।