Expertise Through Skills, Rather Than Only Academic Qualification…
প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে বিশ্ব, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে আমাদের জীবন যাত্রার ধরণ। এখন যেটা আধুনিক, কিছুক্ষণ পরে বিগত। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করা থেকে শুরু করে রাতের বেলায় ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি কাজের ধরন পাল্টে গেছে। যুগোর পরিবর্তনকে যে সাদরে গ্রহণ করতে পারে এবং যে অনুযায়ী নিজেকে অভিযোজিত করতে পারে- সে বিজ্ঞ। অভিযোজনের অর্থ হল পরিবর্তনের সাথে নিজেকে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে নিজেকে সুদক্ষ করে তোলা। যে বিষয়টি নিয়ে আজ কথা বলব সেটা হল, আমাদের বদলে যাওয়া কর্মক্ষেত্র। পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলে যাওয়া কর্মক্ষেত্রের জন্য আমরা নিজেদেরকে এখনও প্রস্তুত করতে পেরেছি কি?
আগে আমরা কোনো পন্য কেনার ক্ষেত্রে মোড়ক দেখে মুগ্ধ হয়ে কিনতাম, কিন্তু এখন শুধুমাত্র মোড়ক আর মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারেনা। এখন সবাই সচেতন কারন সবাই ঘরে বসেই সব কিছু সম্পর্কে জানতে পারে ও ধারনা নিতে পারে। এখন মানুষ শুধুমাত্র গুনগত মানের পন্য চায়, মোড়ক না। ভ্যালু এডেড সার্ভিস চায়।
কর্মক্ষেত্রেও একই রকম দৃশ্য চোখে পড়ছে। বিশ্বের নামী-দামী প্রতিষ্ঠানগুলোও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে যে, যারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে পারে, তাদের কোন প্রকার সার্টিফিকেট না থাকলেও চলবে। মূল কথা হচ্ছে যাকে যেই কাজের জন্য নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাকে সেই কাজ জানলেই হবে, তার কি কি ডিগ্রি আছে অথবা তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কি সেটা মূখ্য বিষয় নয়।
তাই ,এখন পড়াশুনা শুধুমাত্র সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য হলে সেই সার্টিফিকেট কোনো কাজে আসবে না। যে যেই বিষয়ে পড়াশুনা করে তাকে সেই বিষয়ে কাজ জানতে হবে, যদি সে কাজ না জানে তাহলে তার এই সার্টফিকেট কোন মূল্য পাবেনা, একই ভাবে যে কাঙ্খিত কাজটি জানবে তার জন্য সার্টিফিকেট শিথিলযোগ্য।
আমরা প্রায়শই আমাদের ব্যক্তিগত কিছু কাজ যেমন কম্পিউটার কম্পোজ, ছবি তোলা, চাকরির আবেদন করা ইত্যাদি কাজের জন্য নিকটস্থ দোকান গুলোতে যাই। সেখানে যারা আমাদের এই কাজগুলো করে দেয় তারা কেউই কম্পিউটার সায়েন্সে অনার্স বা মাস্টার্স করা না কিন্তু তারা ফটোশপের কাজ খুব ভালো জানে, খুব দ্রুত টাইপ করতে পারে। এখন কোন প্রতিষ্ঠানে যদি ডিজাইনার প্রয়োজন হয় তাহলে কি কাজ জানা লোকটা চাকরি পাবে নাকি উচ্চ শিক্ষিত অদক্ষ কোন প্রার্থী চাকরি পাবে? প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এতদিন সার্টিফিকেটকেই মূল্যায়ন করা হতো, কিন্তু এখন সময় এসেছে প্রকৃতভাবে কাজকেই মূল্যায়ন করার, তাই এখন যে ভালো কাজ জানবে তার সার্টিফকেট বিবেচ্য নয়।
এখন থেকে মার্কেটিং জব করতে গেলে মার্কেটিংটাই ভালোভাবে জানতে হয়। মার্কেটিং নিয়ে মাস্টার্স শেষ করেও তেমন সুফল পাওয়া যাবে না যদি না সে বাস্তবে ভাল মার্কেটিং করতে পারে। এখন বাস্তবিক কাজে দক্ষতা দেখে চাকরি দেওয়া হয়, সার্টিফিকেট পরের ব্যাপার।
এমনি ভাবে প্রত্যেকটা কাজের ক্ষেত্রে এখন থেকে শুধুমাত্র কাজকে, কাজের দক্ষতাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, সার্টিফকেটকে না। এই পরিবর্তন আমাদেরকে নিজ নিজ কাজে দক্ষ হতে প্রেরণা দেবে এবং প্রথা সিদ্ধ চাকরির প্রক্রিয়াকে বিদায় দিয়ে কাজকে স্বীকৃতি দিবে। যে যত দক্ষ যে তত দ্রুত সাফল্যের শিখরে আরোহণ করতে পারবে। চাকুরি লাভের পরেও প্রমোশন বা সিনিয়রিটির ব্যাপারটি দক্ষতা সাপেক্ষে মূল্যায়নের সময় এসে গেছে।
তাই এখন সময় জেগে উঠার। যারা নানা প্রতিকূলতার জন্য ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি তারাও যদি কোন কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে তাদের জন্যও আসছে সুযোগ। আর যারা পড়াশুনা করে নিজেদের সাফল্য আনতে চায় তারাও যেন নিজেদের পড়াশুনার সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষতা অর্জন করে।
এখন স্মার্ট প্রার্থী তারাই, যারা যুগ পরিবর্তনের হাওয়া অনুধাবন করে যে অনুযায়ী নিজেকে দক্ষভাবে গড়ে তোলে। ভাগ্যকে দোষারোপ না করে কর্ম দিয়ে দুনিয়াটা জয় করার প্রত্যয় ধারণ করে। সার্টিফিকেটের পাশাপাশি দক্ষতা বাড়াতে নিজেকে নিয়োজিত রাখে। আর এক্ষেত্রে সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং নিজের মনোবল অটুট থাকাটাই যথেষ্ট।