MEETING NEEDS TO BE CUSTOMIZED & EFFECTIVE
কর্পোরেট অফিসগুলোতে মিটিং খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। প্রায়ই দেখা যায় কোন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় সকলে মিলে মিটিং ডাকা হয় এবং সেখানে সকলের মতামত ও আলোচনার ভিত্তিতে একটি সমাধান বা সিদ্ধান্তে আসা হয়। কিছু কিছু সিদ্ধান্ত বা সমস্যার সমাধান মিটিং ছাড়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না কারণ সেখানে অনেক মানুষের মতামতের প্রয়োজন থাকে আর সকলের মতামত নিয়ে কোন একটি সিদ্ধান্তে পৌছানোর ক্ষেত্রে মিটিং সত্যিই খুবই কার্যকরী একটি উপায়।
কিন্তু মিটিং এর যেমন গুরুত্ব আছে তেমনি এর ক্ষতিকর দিকও আছে। একটি মিটিং শুরু হলে সেটি কখনোই সর্বনিম্ন এক ঘন্টার আগে শেষ হয় না। অনেক সময় মিটিং এ যোগ দিতে এর সদস্যদের অনেক দূর থেকে বা তাদের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে আসতে হয় যার কারণে মাঝে মাঝে তারা সঠিক সময়ে আসতে না পারায় মিটিং শুরু হতেও সময় লাগে অনেক বেশী এবং শেষও হয় দেরী করে। মাঝে মাঝে মিটিং এ কাজের কথার ফাঁকে ফাঁকে অপ্রয়োজনীয় কথা-বার্তা, হাসি-ঠাট্টা শুরু হয় যা মিটিং এর উদ্দেশ্যকে ব্যহত করে এর সময়ের দীর্ঘতা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে যখন একটি মিটিং এ সকল সদস্যরা তাদের নিজ নিজ মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চায় তখন অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা চলে আসে যার সাথে মূল বিষয়বস্তুর কোন সম্পর্ক নেই। এ সকল কারণে মাঝে মাঝে একটি সহজ সিদ্ধান্তে আসতেও সকলের অনেক সময় লাগে ও মিটিং শেষও হয় অনেক দেরীতে আর মাঝখানে নষ্ট হয় সকলের অফিসের মুল্যবান সময়গুলো। প্রত্যেকের অফিসেই তাদের নিজস্ব গুরুত্বপুর্ণ কাজ থাকে। একটি মিটিং এ আসলে তাদের কাজগুলো সব Pending হয়ে যায় যা ব্যাঘাত ঘটায় গোটা অফিসের সিস্টেম ও ম্যানেজমেন্টে।
এ কারণে প্রতিনিয়ত অফিসে হওয়া এ সকল মিটিং গুলোর সংখ্যা কমানো উচিত। মিটিং এর অবশ্যই প্রয়োজন আছে যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই কারণ কিছু কিছু বিষয় ও সিদ্ধান্ত আছে যা মিটিং ছাড়া কখনই ঠিক করা সম্ভব নয় কিন্তু ছোট-খাট সমস্যা সমাধানে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অযথা অপ্রয়োজনীয় মিটিং ডাকার যে প্রবনতা অফিসগুলোতে বহুদিন ধরে চলে আসছে, সেগুলো বন্ধ করা উচিত। যে সমস্যার সমাধান মেইলে, অনলাইনে, টেলিফোনে, কনফারেন্স কলে বসেই সেরে নেয়া যায় তার জন্য আলাদা ভাবে সময় নষ্ট করে মিটিং ডাকার কোন প্রয়োজন নেই। এখন প্রযুক্তির যুগে মানুষ নিজ নিজ অফিসের চেয়ারে বসেই কনফারেন্স কলের মাধ্যমে দেশী বিদেশী সব ক্লায়েন্টের সাথে অল্প কথাতেই মিটিং সেরে নেয়। এতে করে তার যাতায়াতেও সময় যায় না ও হাতের কাজেও ব্যাঘাত ঘটে না। প্রত্যেক অফিসে উচিত এই ধরনের অভ্যাসগুলি চালু করা।
পাশাপাশি যেসকল মিটিং না করলেই নয় এবং অত্যান্ত জরুরী সেক্ষেত্রে মিটিং এ যেন অপ্রয়োজনীয় কথায় সময় নষ্ট না হয় তার জন্য যিনি মিটিংটা ডাকবেন তিনি আগে থেকেই মিটিং এর সকল বিষয়বস্তু ও ডকুমেন্ট সবাইকে মেইলে পাঠিয়ে দিবেন এবং সবাই মিটিং এ আসার আগেই ঐ ডকুমেন্ট গুলো স্ট্যাডি করে আসবেন। অতঃপর মিটিং এর বক্তা পুর্নাংগ বিষয়টিকে একটি পাওয়ারপয়েন্টে নিয়ে এসে সকলের সামনে উপস্থাপন করবেন। অতঃপর, আগে থেকে স্ট্যাডি করার কারণে সকলের ঐ বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হবে এবং তখন অল্প কথাতেই সকলের মতামতের উপর ভিত্তিতে কাংক্ষিত সমাধান বা সিদ্ধান্তে পৌছানোও সহজ হয়ে যাবে। এর ফলে একটি মিটিং এর জন্য ঠিক যতটুকু দরকার, ততটুকুই সময় ব্যয় হবে এবং সবাই অল্প সময়ে মিটিং শেষ করে আবার নিজ নিজ কাজে ফিরে যেতে পারবে।
মিটিং এর বিষয়টি গোটা কর্পোরেট কালচারের সাথে নিবিড় ভাবে মিশে আছে। যেহেতু এর ক্ষতিকর দিকের সাথে সাথে প্রয়োজনীয় দিকটিও বিদ্যমান তাই চাইলেই এই কালচারটিকে কর্পোরেট দুনিয়া থেকে সহজে বাদ দেয়া কখনোই সম্ভব নয়। কিন্তু চাইলে যা করা সম্ভব তা হচ্ছে এই কালচারটিকে Customize করে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে Integrate করে সকলের সুবিধার্থে নতুনভাবে সঞ্চালন করা। আর এভাবেই সম্ভব আধুনিকতা ও প্রযুক্তির সাথে নিজেদেরকে Update ও Upgrade করে বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে চলা।