The necessity of Technology in Employability
এখনকার যুগে সব ধরণের টেকনোলজিক্যাল সুযোগ সুবিধা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যক্তিরা এখন নতুন নতুন অ্যাপ, নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা, নতুন নতুন গবেষণা ও নতুন নতুন সমস্যার সমাধান তৈরী করছে। প্রতিটি মূহুর্তেই টেকনোলজী নতুন নতুন করে আপডেট হচ্ছে আর বাতিল হয়ে যাচ্ছে সকল পুরনো ভার্সন। তাই যারা এই আপডেটের সাথে নিজেকে অভিযোজিত করে নিতে পারছে তারাই এখন টেকনোলজীর জগতে প্রভাবশালী বা নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থায় আছে। কিন্তু, যারা এখনো সেই পুরনো ভার্সন গুলোই আকড়ে ধরে পড়ে আছে, তাদের প্রতিনিয়ত নানান রকম প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
সময় এখন টেকনোলজীর আর এই টেকনোলজীকে বশ মানাতে হলে এখন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে জ্ঞানটি জানা দরকার তা হল টেকনোলজীক্যাল ইন্টিগ্রেশন। আমরা জানি, একজন সফটওয়ার ডেভেলপারের একটি নতুন সফটওয়ার তৈরীতে যথেষ্ট সময় ও ডমেইন সম্পর্কিত জ্ঞান প্রয়োজন হয়; কিন্তু এই জ্ঞান এখনকার সময়ে ৯৯% গ্রাজুয়েটদেরই থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই তারা হয়তো এডুকেশনটা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে নিচ্ছে কিন্তু প্রাকটিক্যাল জ্ঞানের ব্যাপারে তাদের একটি ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে যা তাদের ব্যক্তিগত ও প্রফেশোনাল লাইফে গিয়ে প্রতিকৃয়া সৃষ্টি করছে।
দেখা যাচ্ছে যে ডেভেলপারের ডমেইন নলেজ নেই, সে যদি তার প্রফেশনাল লাইফে কাজ করতে গিয়ে এই প্রাকটিক্যাল নলেজ গুলো শেখার পিছনে সময় ব্যয় করে ততদিনে দেখা যায় তার সফটওয়ারটি আর কাজ করে না; কারণ সেটা ততদিনে আপডেট হয়ে গেছে। আর এই কারণেই এখন টেকনোলজিক্যাল ইন্টিগ্রেশনের এত দরকার। এই বিষয়টিতে যার দখল থাকবে প্রফেশনাল লাইফে তার জন্য কাজ করা সব থেকে বেশী সহজ হবে। যেমন একটি কোম্পানীতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বিপনন করার জন্য রিপোর্টিং, ভোক্তার জন্য সিআরএম, ফোরাম, ব্লগ, ফটো গ্যালারী, ভিডিও, মিডিয়া, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি হাজার হাজার বিভিন্ন ধরণের মাধ্যম দরকার হয়।
এখন এগুলো যদি কেউ এসে শুরু থেকে ডেভেলপ করতে যায় তবে তার জন্য এটি অসম্ভব ব্যাপার হবে। তাকে যা করতে হবে, মার্কেটে সাম্প্রতিক সর্বোৎকৃষ্ঠ যে যুগোপযোগি রিসোর্স আছে সেগুলোকে যদি সে তার কাংক্ষিত কোম্পানীর সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেট করে যথাযথ ডকুমেন্টেশন, সিস্টেম ডিজাইন ও ম্যাপিং করে ঐ কোম্পানীর সকল সুলভ সুযোগ সুবিধার উপর ভিত্তি করে একটি সমাধান দিতে পারে, তাহলে কিন্তু সেই কোম্পানী তাকেই লুফে নিবে। এর কারণ হচ্ছে ৯৯% কোম্পানীর মালিক বা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী যারা আছেন, তাদের টেকনোলজী সম্পর্কে এত গভীর বা ব্যাপক ধারণা থাকে না যা একজন ইয়াং গ্রাজুয়েটের থাকে।
মোদ্দা কথা, একজন ইয়াং গ্রাজুয়েট এই টেকনোলজীগুলোকে কতটুকু ইন্টিগ্রেট করে প্রেজেন্টশন করতে পারে সেটার উপরই কিন্তু মুল্যায়ন হবে যে সে আদৌও মার্কেটে কতটুকু নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবে। এর কারণ হল, একটি লোকের যদি প্রোগ্রামিং বা কমপিউটার সায়েন্সের মৌলিক জ্ঞান থাকে কিন্তু ডেপথ প্রোগ্রামিং করার দরকার হয় না, কোডিং করার দরকার হয় না তবুও সে সহজলভ্য টেকনোলজীগুলোকে ইন্টিগ্রেশন করেও একটি কোম্পানীকে ১০০% সহায়তা দেবার মত যোগ্যতা রাখে এবং এই কর্ম ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে ঐ কোম্পানীও তাকে উচ্চ স্তরের মূল্যায়ন করতে পারে।
তাই সব কিছুই নির্ভর করছে কে কতটুকু টেকনোলজী জানে ও ব্যবহার করতে পারছে। যেমন অনেকেই আছে প্লাজিয়ারিজম সফটওয়ার সম্পর্কে জানে না কিন্তু এই সফটওয়ার মার্কেটে সহজলভ্য। অনেকেই আছে ক্যামকার্ড সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই, কিন্তু এটার ফ্রি ভার্সন এখন মার্কেটে অহরহ ব্যবহার হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় সব সফটওয়ারেরই কিন্তু ফ্রি ভার্সন পাওয়া যায়। কারো কোম্পানী যদি ছোট হয় তবে সে ফ্রি ভার্সন দিয়ে তার কোম্পানীকে সাপোর্ট দিতে পারে আর কোম্পানী যদি বড় লেভেলের হয় তাহলে হয়তো তাকে প্রিমিয়ার ভার্সনটা কিনে নিতে হবে। সব মিলিয়ে টেকনোলজী ও তার ব্যবহার জানা থাকলে সব দিক থেকে সুবিধা অর্জন করা যায়।
আমরা যদি শুধু গুগল ট্রান্সলেটর এর কথাই বলি, শুধু এই একটা প্ল্যাটফর্ম দিয়ে আমরা চাইলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে যে কোন ভাষাকে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী অনুবাদ করে কাজে লাগাতে পারি। এমনকি এখন এই সফটওয়ার দিয়ে আমরা ভয়েজও ট্রান্সলেট করতে পারি যা ইতোমধ্যে চাইনিজরা করে থাকে। তারা ইংলিশ শেখার প্রতি আগ্রহী না, তারা কোন বিদেশীর সাথে কমুনিকেশন করতে হলে সরাসরি ভয়েজ ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে তাদের ভাষাকে চাইনিজে ট্রান্সলেট করে নিচ্ছে। আবার বিপরীত ঘটনা ঘটছে তাদের সাথেও যারা চাইনিজদের সাথে যোগাযোগ করছে কারণ তারাও ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে বুঝে নিচ্ছে চাইনিজদের কথা।
তাই কখন কোথায় কোন টেকনোলজী আমাদের কাজের পথকে সহজ করে দিবে আমরা নিজেরাও কিন্তু তা জানি না। যেমন চাইনিজদের কথাতেই আবার ফিরে যাই। কেউ যদি চায়নাতে যায় তবে সে দেখবে সেখানে গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক কোন কিছুই কাজ করে না। সুতরাং যে চালাক ও টেকনোলজীতে ব্যবহারে চৌকষ সে তখন ব্যবহার করবে ভিপিএন। আবার ভিপিএন এর মধ্যেও কিন্তু কোয়ালিটি ভিপিএন আছে। ভাল ভিপিএন ব্যবহার না করলে কিন্তু সেটা যথাযথভাবে কাজ করবে না। অর্থাৎ ভিপিএন ব্যবহার করে সে কিন্তু সহজে চায়নায় বসে ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসএ্যাপ সব কিছু ব্যবহার করতে পারবে।
এছাড়াও, গুগলের নিজস্ব প্ল্যাটফর্মেও কিন্তু প্রায় কয়েকশ সফটওয়ার আছে যেমন গুগল ড্রাইভ, ডক, শিট, হ্যাংআউট, ক্যালেন্ডার, চ্যাট, কনটাক্ট ইত্যাদি। কেউ শুধুমাত্র এগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান রেখেও তার দৈনন্দিন কাজ গুলোকে সহজ করে তুলতে পারে। মোটকথা, আজকের যুগে আইসিটি চাকুরির বাজারে সব থেকে বড় সুযোগ হচ্ছে, কে কত রকমের টেকনোলজীক্যাল ইন্টিগ্রেশন জানে ও কিভাবে সে একটার সাথে আরেকটার ইন্টিগ্রেশন করতে পারে। এসব কাজে যে দক্ষতা অর্জন করতে পারবে তাকেই তখন যেকোন কোম্পানী লুফে নেবে। এখানে সব থেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে কেউ একজন কম্পিউটার সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডে পড়াশোনা না করেও শুধু মাত্র টেকনোলজির সার্বিক জ্ঞান থাকার কারণে সে আইসিটি চাকুরি বাজারে তার একটি শক্তিশালী অবস্থান গড়ে নিতে পারবে। আর, এই কারণেই আজকের এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আত্ম উন্নয়ন ও প্রফেশনাল লাইফে একটি সফল ক্যারিয়ার গঠনে টেকনোলজীক্যাল ইন্টিগ্রেশনের কোন বিকল্প নেই।