Career Guideline for Every Corporate Employee

Career Guideline for Every Corporate Employee

প্রতিটি মানুষই চায় জীবনে অনেক বড় একটি অবস্থানে পৌছাতে, হোক সে চাকরীজীবী বা হোক সে ব্যবসায়ী। এই উচ্চাকাংক্ষাই একজন মানুষকে সফল বানাতে সক্ষম কিন্তু যাদের মাঝে কোন উচ্চাকাংক্ষা এবং জীবনে বড় কিছু হবার কোন তাগিদ ও চেষ্টা নেই তারা সারাটি জীবন একটি নির্দিষ্ট অবস্থানেই আটকে থাকে। তাদের জীবনটি কাটে হতাশা ও আফসোসে জর্জরিত হয়ে। তাই জীবনে উচ্চাকাংক্ষা অনেক বড় একটি বিষয়। উচ্চাকাংক্ষা মানুষকে তার কাজের গতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যারা বিভিন্ন কোম্পানীতে চাকরী করে তাদের কম বেশী প্রায় সকলেরই লক্ষ্য থাকে তাদের বর্তমান অবস্থান থেকেও আরো ভাল কোন অবস্থানে গিয়ে পৌছাতে। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই যা হয়, তারা বুঝতে পারে না ঠিক কোন পথে ও কিভাবে তারা তাদের Career কে এগিয়ে নিয়ে যাবে। 

আমাদের সমাজে চাকরীপ্রার্থী যে কোন শিক্ষার্থী বা Employee দের একটি কমন চাওয়া হচ্ছে তারা ক্যারিয়ার নিয়ে উচ্চাকাংক্ষা রাখে ঠিকই কিন্তু চাকরী খোঁজার দিক থেকে তারা সর্বদাই আরামদায়ক চাকরীগুলো পেতে চায়। কিন্তু তারা এটা বুঝতে চায় না যে আরামদায়ক চাকরী দিয়ে কখনো ক্যারিয়ারের Growth ও Development সম্ভব নয়। আপনি হয়তো যে কোন কোম্পানীতে একটি আরামদায়ক Office Desk Job দিয়ে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন কিন্তু সেই কোম্পানীতে যদি লং রানে টিকতে চান, যদি Promotion পেয়ে নিজের পজিশনকে বৃদ্ধি করতে চান, যদি Salary, Increment, Incentive বাড়াতে চান তবে মনে রাখবেন আপনাকে অবশ্যই নিজেকে কোম্পানীর নিকট Valuable হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। আর এটা আপনি কখনই গতানুগতিক আরামদায়ক চাকরী করে করতে পারবেন না। আপনাকে আপনার Comfort Zone থেকে বের হয়ে এসে Out of The Box চিন্তা করা শিখতে হবে। নানান রকম Creative ও Innovative কাজের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে হবে, ক্যারিয়ার সংক্রান্ত বিভিন্ন Challenge নিতে হবে, কোম্পানীর Marketing এ অবদান রাখতে হবে। মোটকথা, একটি কোম্পানী সর্বদাই ফোকাস থাকে Revenue এর প্রতি। তাই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে কোন ধরণের Challenge নিয়ে বা কোন Sector এ কাজ করার মাধ্যমে আপনি কোম্পানীর Revenue বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারেন। অথবা আপনি আপনার গতানুগতিক কাজের মধ্যেই আলাদা কোন Value Add করে কিভাবে কোম্পানীর Revenue বৃদ্ধি করতে পারেন।

এক শ্রেনীর মানুষ আছে সর্বদাই অল্পতে হতাশ হয়ে পড়ে ও যে কোন বিষয়ে সব সময় নেতিবাচক চিন্তা করে থাকে। এ ধরণের মানুষেরা সকল কোম্পানীতেই কম বেশি রয়েছে যাদের সারা জীবনেও কখনো ক্যারিয়ারে উন্নতি সাধন হয় না কারণ তাদের মধ্যে কোন উচ্চাকাংক্ষা নেই তাই তারা কখনো নিজেদের অবস্থার উন্নতির জন্য চেষ্টাই করে না। তারা সব সময় তাদের গতানুগতিক আরামদায়ক কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। কোন ধরণের Creative, Innovative, Challenging কাজের দ্বায়িত্ব তারা নিতে চায় না। তারা তাদের পুরনো ধ্যান ধারণার বাহিরে বেরিয়ে কখনো Out of The Box চিন্তা করতে পারে না ও কোম্পানীর Revenue বৃদ্ধিতে তারা কোন Value Addition বা অবদান রাখতে পারে না। অবশেষে, এরাই আবার নিজেদের অক্ষমতা ও অযোগ্যতাগুলোকে ঢাকতে তাদের ক্যারিয়ারের অবনতির জন্য নিজেদের ভাগ্যকে ও কোম্পানীকে দোষারোপ করতে থাকে। কিন্তু তাদের এই পরিণতির জন্য যে তারা নিজেরাই দায়ী সেটা তারা উপলব্ধি করতে চায় না। তারা বুঝতে চায় না যে মানুষের জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী। এই অল্প সময়ের জীবনে মানুষের কাজ করার সক্ষমতা থাকে মাত্র ২৪/২৫ বছর। একটি সময় পর তার বয়স বাড়তে থাকে ও কর্মক্ষমতাও দিন দিন কমতে থাকে। এখন এই ২০ থেকে ২৫ বছরের ক্ষণস্থায়ী কর্মজীবনে একটি মানুষ যদি পরিশ্রম করতে না চায়, যদি Challenge নিতে না চায়, নিজেকে চলমান বিশ্বের চাকরীর বাজারের সাথে তাল মেলাতে নিজের Self Development করতে না চায় তবে সে কখনোই তার জীবনের কোন লক্ষ্যই অর্জন করতে পারবে না। ক্যারিয়ার গঠণে Positivity বা ইতিবাচকতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানুষের চলার পথ কখনো মসৃন থাকে না। তাকে নানান রকম বাধা বিপত্তি পার হয়ে কষ্ট করেই তবে তার লক্ষ্যে পৌছাতে হয়। এই দীর্ঘ পথে তাকে অনেক সমালোচনা ও হিংসা বিদ্বেষের সম্মুক্ষীন হতে হয়। কিন্তু এগুলোকে আমলে নিয়ে কেউ যদি হাল ছেড়ে দেয় ও নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করতে থাকে তবে তার জীবনের জার্নি শুরুর আগেই সে ব্যর্থ হয়ে যায়। জীবনে যতই প্রতিবন্ধকতা আসুক না কেন সকল বিষয় সম্পর্কে Positive মন মানসিকতাই পারে একজন মানুষকে সফলতার পথ দেখাতে। 

একবার ভেবে দেখুন, একটা মানুষ কেন কষ্ট করে দিন রাত কাজ করে ? অবশ্যই এর পিছনে তার কোন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য কাজ করে। কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা গোল ছাড়া কাজ করা আর বৈঠা ছাড়া নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দেয়া একই কথা। তাই আগে নিজের একটি গোল ঠিক করুন ও তার প্রতি আপনার ফোকাস সেট করে কাজে লেগে পড়ুন। আপনি যদি আপনার একটি সফল ক্যারিয়ার গঠণ করতে চান তবে আপনাকে যে সকল বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে বা যে সকল বিষয়কে আপনি আপনার গোল হিসেবে সেট করতে পারেন, সেগুলো হলোঃ 

  • Own Identity – প্রতিটি মানুষই চায় তার নিজস্ব একটি Identity বা পরিচয় তৈরী করতে। সে কখনই অন্যের ছত্র-ছায়ার থাকতে চায় না। তাই পরিশ্রম ও চেষ্টার দ্বারা নিজের একটি মর্যাদাপূর্ণ Position অর্জন করার চেষ্টা করুন।
  • Own Satisfaction – আপনি যে কাজই করুন না কেন, সেই কাজের প্রতি যদি আপনার আত্ম-তৃপ্তি না থাকে তবে আপনি কখনই সেই কাজ দ্বারা আপনার ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারবেন না। তাই খুঁজে বের করুন আপনার Satisfaction Job কোন গুলো। সেগুলোর প্রতি আপনার ফোকাস সেট করুন ও সেখানে নিজেকে Develop করুন। 
  • Family Satisfaction – পরিবার প্রতিটি মানুষের জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। আপনি যদি আপনার পরিবারের ভরনপোষনের দ্বায়িত্ব সফলভাবে পালন করতে চান, তবে আপনার একটি সফল ক্যারিয়ার গঠণ অত্যান্ত জরুরী। আপনার ক্যারিয়ার যত উন্নত হবে, আপনার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থান আরো বেশী শক্তিশালী হবে।
  • Note Taking & Automation – আপনার দৈনন্দিন জীবনের সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে Note রাখার অভ্যাস তৈরী করতে হবে যেন আপনি কোন বিষয় ভুলে না যান। Note রাখার অভ্যাসটি আপনাকে ভবিষ্যতে আপনার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক সাহায্য করবে। সেই সাথে নিজের কাজ গুলোকে Automated করার চেষ্টা করুন। আপন আর গুরুত্বপূর্ণ কাজের ফাইল গুলোর Data Backup রাখুন। একটি কাজ যেন আপনাকে দ্বিতীয়বার করা না লাগে, সেভাবে নিজের কাজ গুলোকে Technology এর সাথে Update ও Upgrade করুন।
  • Own Judgement / Valuation – আপনি যে কোন কোম্পানীতে যে কোন কাজই করুন না কেন, আপনাকে সর্বদা সৎ ও নীতিবান থাকতে হবে। নিজের কাজের ব্যাপারে আপনাকে স্বচ্ছ থাকতে হবে। কখনো কোন কাজে ফাঁকি দেয়া যাবে না। নিজেই নিজের কাজের Judgement বা Self-evaluation করতে হবে। আপনি যদি আপনার কাজের প্রতি সৎ না থাকেন, তবে আপনি কখনই জীবনে সফল হতে পারবেন না।
  • Own Experience & Knowledge – আপনি যে ধরণের কাজই করুন না কেন, কোন কাজকেই কখনই ছোট করে দেখবেন না। কোন কাজের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানকে কখনো অবহেলা করবেন না কারণ জীবনে এই দুটি জিনিস কখনো আপনাকে ধোঁকা দিবে না। আজকের কোন কাজের ভাল বা মন্দ অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান ভবিষ্যতে আপনার জন্য সুবর্ণ সুযোগের দুয়ার খুলে দিতে পারে। 
  • Own Timing UItilization – আগেই বলেছি একটি মানুষ তার জীবনে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছর সক্রিয়ভাবে কর্মক্ষম থাকে। তাই আপনাকে অবশ্যই এই অল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে আপনার ক্যারিয়ারকে উন্নত করে আপনার লক্ষ্যে পৌছাবেন তার একটি সময়সূচী আপনার সেট করে নিতে হবে। এই রুটিনটি কঠোরভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি আপনার জীবনের কাংক্ষিত সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন।  
  • Knowledge & Technology – শুধু মাত্র কাজের প্রতিই আমাদের সকল সময় নিবদ্ধ করলে চলবে না। প্রতিদিন কিছু সময় বরাদ্ধ রাখতে হবে জ্ঞান চর্চার জন্য। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে চেষ্টা করুন নতুন কিছু শিখতে। হতে পারে নতুন Technology, হতে পারে নতুন Topic, হতে পারে নতুন System যে কোন কিছু যা আপনার জীবন ও কাজগুলোকে আরো বেশী গতিশীল ও সহজ করে তুলতে পারে। 

সর্বদা মনে রাখবেন, মহান আল্লাহ আপনাকে আমাকে কখনই নিরর্থক সৃষ্টি করেনি। এই পৃথিবীর সব থেকে ব্যর্থ ও হতাশ মানুষটিরও জন্ম নেবার পিছনে কোন না কোন উদ্দেশ্য রয়েছে। তাই সৃষ্টিকর্তার প্রদত্ত এই জীবনকে অবহেলায় নষ্ট করার অর্থ হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার অফুরন্ত নেয়ামতকেই অপমান করা। আমাদের উচিত আমাদের আশে পাশের সকল সুযোগ ও নেয়ামতগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমাদের জীবনের সর্বোচ্চ উন্নতি সাধন করা। আর জীবনের এই পথে আমাদের সকলের সাথে মিলে মিশে একে অপরকে সাহায্য সহযোগীতার মাধ্যমেই শুধু আমাদের নিজেদেরই নয় বরং আশেপাশের সকলের জীবন উন্নয়নেও অবদান রাখতে হবে। কখনো কাউকে তার উন্নতির জন্য হিংসা করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, 

“হিংসা করে অন্যের ক্ষতি সহজেই করা যায়,

কিন্তু কোনোদিনও নিজের উন্নতি করা যায় না।”

 এই কারণেই মহান আল্লাহ বলেছেন, 

“তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমরা তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না? সুতরাং আল্লাহ্‌ মহিমান্বিত, প্রকৃত মালিক, তিনি ছাড়া কোন হক্ক ইলাহ নেই; তিনি সম্মানিত ‘আরাশের রব। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে, এ বিষয়ে তার নিকট কোন প্ৰমাণ নেই; তার হিসাব তো তার রব-এর নিকটই আছে; নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না। আর বলুন, ‘হে আমার রব! ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আর আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ ”  

– সুরা মমিনুন আয়াত ১১৫ থেকে ১১৮

ক্যারিয়ার উন্নয়নে কর্মক্ষেত্রে সৎ থাকাটা অত্যান্ত জরুরী। আপনার সব ধরণের Skill থাকতেই হবে এমনটা জরুরী নয় এবং এটা সম্ভবও নয়। কোন মানুষই Perfect নয়। তার মাঝে কিছু না কিছু Skill কম বেশী থাকতেই পারে যা সে কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে করতে ধীরে ধীরে শিখে নিয়েও Balance করে নিতে পারে। কিন্তু কারো মধ্যে যদি সততা না থাকে তবে তার যতই Skill ও Knowledge থাকুক না কেন, সে ভবিষ্যতে কখনই সফল হতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে বিখ্যাত ব্যবসায়ী Warren Buffett বলেছেন,

“কাউকে চাকরী দেবার সময়ে সততা, বুদ্ধি ও কাজ করার ক্ষমতা – এই ৩টি গুণ তার আছে কিনা নিশ্চিত হও। যদি সততা বাদে বাকি দুটো অনেক বেশীও থাকে, তাকে কাজে নিও না। এর বদলে সততাপূর্ণ বোকা আর অলসদের কাজে নাও। অসৎ বুদ্ধিমান আর কর্মক্ষমরা তোমার সর্বনাশ করবে।”

এমন অনেক Employee আছেন যারা নিজেদের ক্যারিয়ার ও অবস্থানের উন্নতি করতে চান, যারা Challenge ও Risk নিতে প্রস্তুত, যারা ইতঃমধ্যেই নানান রকম Creative ও Innovative কাজের সাথে যুক্ত আছেন, যারা নিজেদের কাজের বাহিরেও সাধ্য মত Value Add করে কোম্পানীর Revenue তে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবদান রাখছেন কিন্তু তারা সঠিক সুযোগের অভাবে Management এর সামনে নিজেদেরকে মেলে ধরতে পারছেন না। আপনাদের প্রতি আমার আহবান, আপনারা সামনে এগিয়ে আসুন, Management এর সাথে যোগাযোগ করুন। তাদের সামনে নিজেদের যোগ্যতাকে কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করুণ। Management অবশ্যই তখন আপনাদেরকে আপনাদের প্রাপ্য কদর প্রদান করবে। কারণ আমরা সর্বদাই সেই সকল Employeeদেরকে চাই ও তাদের কদর করি যারা Creative, Innovative, Challenge ও Risk Taking মন মানসিকতার অধিকারী, যারা নতুন নতুন System ও Technology শিখতে ও কাজে লাগাতে চায়, যারা Marketing পছন্দ করে ও কোম্পানীর Revenue আয়ে অবদান রাখতে চায়। আমরা এ ধরণের মানুষদের খুঁজে বের করতে চাই ও তাদেরকে তাদের কাংক্ষিত সুযোগ প্রদান করতে চাই। তাই, আসুন আমরা একত্রে এগিয়ে এসে পরস্পরকে সাহায্য করার মাধ্যমে আমাদের নিজেদের ও কোম্পানীর উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে সফল হই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *