Personal Accountability & Career Development
Introduction
মানুষের জীবনে কর্মের ভূমিকা অপরিসীম। যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর ইতিহাসে যত মনীষীরা অমর হয়ে আছেন, তারা সকলের বেঁচে আছেন তাদের কর্মের জোরে। মানুষের কর্মই তাকে বাঁচিয়ে রাখে যুগের পর যুগ। সৎ কর্ম ও অসৎ কর্ম উভয়ই। যেমন, হিটলার ও মাদার তেরেসা দুজনেই ইতিহাসে অমর হয়ে আছে তাদের কর্মের জন্য এবং আজীবন অমর হয়েই থাকবে। কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে হিটলারকে মানুষ আজীবন ঘৃণাভরে মনে রাখবে ও মাদার তেরেসাকে মনে রাখবে শ্রদ্ধার সাথে। সুতরাং একটি মানুষের মৃত্যুর পর তাকে পৃথিবী কোন নজরে দেখবে সেটাও নির্ভর করে তার কর্মের উপর। মানুষের কর্মস্থান ঐ মানুষের জন্য অনেক পবিত্র একটি জায়গা তাই এখানে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করা প্রতিটি মানুষেরই নৈতিক দ্বায়িত্ব। সকলকে মনে রাখতে হবে যে কেউ যদি তার কাজে ফাঁকি দেবার চেষ্টা করে বা কোন ধরণের অসততার পথ বেছে নেয় তবে মূলত সে তার কর্মস্থানেরই ক্ষতি করছে যার ফল ভবিষ্যতে তাকেও ভোগ করতে হবে।
একটি কোম্পানীতে কর্মরত সকল Employeeদের সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট কাজ ভাগ করে দেয়া থাকে যেগুলো করার দ্বায়িত্ব শুধু্মাত্র তাদেরই। এই কাজগুলো তাদের প্রতিদিনই কম বেশী করতে হয়। এখন কিছু কিছু Employee আছে যারা যন্ত্রের মত প্রতিদিন অফিসে এসে তাদের সেই দৈনিক কাজগুলোই শুধু করে যায় ও অপেক্ষা করতে থাকে কখন অফিস শেষ হবে তার জন্য। তারা কখনও ভেবে দেখতে যায় না যে তাদের এই দৈনন্দিন কাজগুলো আদৌও কোম্পানীর Revenue Generate বা Marketing এ কোন ভূমিকা পালন করছে কিনা। তারা কখনো চেষ্টা করে না নতুন নতুন Idea যোগ করে তাদের কাজগুলোকে আরো উন্নত করে কোম্পানীর উন্নতির সাথে সম্পৃক্ত করার। তারা চেষ্টা করে না তাদের এই দৈনন্দিন কাজের বাহিরে কোম্পানীতে আরো কত জায়গায় কাজ করার Opportunity আছে, সেগুলোকে খুঁজে বের করে নিজের Careerকে আরো ভাল অবস্থানে নিয়ে যেতে। তারা শুধু আশায় থাকে প্রতিদিন অফিসের সময় শেষ হবার সাথে সাথে অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় যেতে ও মাস শেষে সময়মত বেতন পেতে। আবার এক শ্রেণীর Employee রয়েছে যাদেরকে কোন একটি কাজের দ্বায়িত্ব দেয়া হলে বার বার Follow-up করতে হয়। অর্থাৎ উক্ত কাজটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পিছনে লেগে থাকতে হয়। এরা সব সময় নানাবিধ অজুহাত দিতে পছন্দ করে কাজের প্রতি তাদের অবহেলা ও দ্বায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে ঢাকার জন্য। অতঃপর এই সব শ্রেণীর Employeeরাই আবার বছর শেষে অভিযোগ করে বসে যে এত বছর পার হয়ে গেল কিন্তু তারা কোন Increment বা Promotion কেন পেল না।
Prove Your Potentiality to The Company
একটি উদাহরণ দেয়া যাক। আমরা জানি একটি সিঁড়িতে অনেক গুলো ধাপ থাকে এবং কেউ যদি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে চায় তবে তাকে সিরিয়াল অনুযায়ী একদম নিচ থেকে ধাপে ধাপে প্রতিটি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে। এখন কেউ যদি চায় যে সে এক লাফেই উপরে উঠে যাবে বা ৫/৬ ধাপ সে এক লাফেই পার করে দিবে তবে তার ধারণা ভুল। যদি সে লাভ দেয় তবে তার পা পিছলে যাবে এবং সে আহত হয়ে সেই নিচের ধাপেই ফিরে আসবে। সুতরাং জীবনে প্রতিটি অর্জনের পিছনে ধাপে ধাপে অগ্রসর হবার গল্প রয়েছে। ইতিহাসের কোন সফল মনীষীই এক লাফে সব গুলো পরিশ্রমের ধাপ পার হয়ে সফল হতে পারেনি। আর এই জন্যই কথায় আছে, ঘোড়া ডিঙ্গিয়ে কখনো ঘাস খাওয়া যায় না। ঠিক এমনি ভাবে একটি কোম্পানীতে নিজের জন্য একটি যোগ্য অবস্থান তৈরী ও নিজের অবস্থানকে আরো উঁচু পদে নিয়ে যেতে হলে এমনই কিছু ধাপ অনুসরন করে অগ্রসর হতে হয়। নিজেকে কোম্পানীর নিকট যোগ্য হিসেবে প্রমাণ করতে হয়। অর্থাৎ নিজেকে কোম্পানীর নিকট এমন একটি Trusted Asset হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হয় যেন কোম্পানী যে কোন কাজের ব্যাপারে তার প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারে। আর এর জন্য কখনোই নিজের দ্বায়িত্ব-কর্তব্য ও কাজে অবহেলা করা যাবে না। সর্বদা মাথায় রাখতে হবে যে নিজের উপর অর্পিত সকল কাজ গুলো কিভাবে Deadline এর আগেই সম্পন্ন করে জমা দেয়া যায়। কোন Employeeকে কাজ দেবার পর যদি তাকে বার বার Follow-up করতে হয় তবে তার প্রতি কোম্পানীর আর কোন Trust কাজ করে না। তাই এই Trust অর্জনের সব থেকে সহজ পন্থা হচ্ছে সময়ের কাজ সময়ের মধ্যেই শেষ করে জমা দেয়া যেন তার বসের তাকে কোন প্রকার Follow-up করার প্রয়োজন না হয়।
পাশাপাশি নিজের দৈনন্দিন কাজ গুলোকে কিভাবে কোম্পানীর Revenue Generate বা Marketing এর সাথে সম্পৃক্ত করা যায় সেই ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। একটি কোম্পানীর সুনজর সর্বদা সেই সকল Employeeদের প্রতি থাকে যাদের কাজ গুলো সরাসরি কোম্পানীর Revenue আয়ে ভূমিকা রাখে। একটি কোম্পানীকে সাফল্যময় অবস্থানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সেই কোম্পানীর সকল Employeeকে কিছু না কিছু Out of The Box চিন্তা ভাবনা করতে হবে। গৎ বাধা Daily Office Job ও পুরনো রীতি নীতি দিয়ে একটি কোম্পানী খুব বেশী দিন টিকে থাকতে পারে না। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কোম্পানী তথা কোম্পানীর Employeeদেরকে নতুন নতুন ধ্যান ধারণা ও Technology এর সাথে নিজেদেরকে Adapt করে নেয়া শিখতে হবে। কিভাবে Market এ অন্য কোম্পানীদেরকে পণ্য, সেবা ও মানের দিক থেকে টেক্কা দেয়া যায় সেই ব্যাপারে সকলকে যুগপযোগী Idea তৈরী করতে হবে। Marketing Plan গুলোকে নতুন করে মানুষের Taste ও Life Style এর মিলিয়ে সাজাতে হবে যেন সাধারণ মানুষেরা খুব সহজেই আকৃষ্ট হয়।
একজন Employee যদি মনে করে যে, তার কাজ শুধু মাত্র অফিস টাইমে অফিসে এসে নিজের দৈনন্দিন Daily Task সম্পন্ন করা এবং এর বাহিরে তার কোম্পানীর প্রতি আর কোন দ্বায়িত্ব-কর্তব্য নেই তবে সে কখনই কোম্পানীর নিকট একজন যোগ্য ও মূল্যবান Employee হতে পারবে না। একজন যোগ্য Employee এর কাজ হচ্ছে সর্বদা নিজের চোখ কান খোলা রাখা, কোম্পানীর কোথায় কি হচ্ছে তা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ খবর রাখা, কোথাও কোন সমস্যা খুঁজে পেলে তা সমাধানের আশায় বসে না থেকে নিজে এগিয়ে গিয়ে তা সমাধানের ব্যবস্থা করা। আর এই সব কিছু তখনই সম্ভব হবে যখন একজন Employee তার কোম্পানীকে নিজ থেকে Own করবে। কোন কিছু নিজের মনে না করলে কখনই সেটার প্রতি মন থেকে কোন দ্বায়িত্বশীলতা তৈরী হয় না। তাই, যারা Management এর নির্দেশের অপেক্ষায় বসে না থেকে নিজ উদ্যোগে কোম্পানীর উন্নতির জন্য নিজেকে আত্মনিয়োগ করে, কোম্পানীও সেই সকল Employeeদেরকে মূল্যায়নের সময় বিশেষভাবে সুবিধা প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ কেউ যদি Promotion, Increment হচ্ছে না বিধায় হতাশাগ্রস্থ থাকেন তবে মনে রাখুন, আপনার দৈনন্দিন কাজের বাহিরে এই অতিরিক্ত দ্বায়িত্বশীলতার নিদর্শনগুলো খুব সহজেই আপনার Career এর সফলতার দরজাগুলো খুলে দিতে সহায়তা করবে।
It’s Time to Take Load & Enrich Your Career
প্রতিটি মানুষের বয়স ও দক্ষতা অনুযায়ী কাজের লোড ও প্রেশার নেবার একটি Limit আছে। যারা তরুন তারা চাইলেই তাদের দক্ষতা অনুযায়ী কঠিন পরিশ্রমের দ্বারা তাদেরকে প্রদত্ত কাজের দ্বিগুণ কাজ করে দেখাতে পারে। তাদের এই বয়সটাই হচ্ছে কাজ করার ও লোড নেবার আর জীবনে সফল হতে হলে ও নিজের অবস্থান থেকে আরো ভাল অবস্থানে যেতে হলে কাজের লোড নিয়ে বসকে খুশি করা একটি অন্যতম উপায়। এখন একটি কোম্পানীতে কর্মরত কোন Employee যদি বুঝতে পারে যে, সে তার বস বা সুপারভাইজারের দেয়া সকল কাজ সময় মত শেষ করে আরো অনেক বেশী কাজের লোড নিতে সক্ষম; তবে সেই ব্যক্তির উচিত তার বসকে এই বিষয়টি বুঝিয়ে বলা এবং এ ব্যাপারে তার পরামর্শ চাওয়া। এর ফলে ঐ ব্যক্তির বস তখন তাকে আরো বেশী করে কাজ প্রদান করবে। আর কাজগুলো সঠিক ভাবে ও সময়মত সম্পন্ন করার মাধ্যমে বছর শেষে ঐ Employee এর Evaluation Report এ তার নিজের একটি ভাল Reputation তৈরী করতে সক্ষম হবে। অথবা ঐ ব্যক্তি যদি ইতঃমধ্যেই তাকে প্রদত্ত বাড়তি কাজ শেষ করেও আরো কাজের লোড নিতে ইচ্ছুক হয় তবে বস ঐ ব্যক্তিকে সাথে সাথে Promotion দিতে বাধ্য থাকবে। অথবা বস ঐ ব্যক্তিকে অন্য এমন কোন একটি দপ্তরে Transfer করবে যেখানে অধিক কাজের লোড নিয়ে নিজের Career গড়ার সুযোগ রয়েছে। অথবা সর্বোপরি, ঐ ব্যক্তিকে বস Suggession দিবে যে তার যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী এই চাকরী তার জন্য নয়। তার উচিত অন্য কোন কিছু চেষ্টা করা যেখানে সে তার মেধাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে খুব দ্রুত সফলতার মুখ দেখতে পারবে।
যে Employee এভাবে নিজেকে কোম্পানীর নিকট যোগ্য হিসেবে প্রমাণ করতে পারবে সেই একদিন Leader হিসেবে কোম্পানীর নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা অর্জন করবে। আর একজন Leader এর দ্বায়িত্বই হচ্ছে তার সব কাজ গুলোকে Model হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। একজন মানুষের একটি কাজ একবারই করা উচিত। সে যদি বার বার একই কাজের পিছনে সময় ব্যয় করে তবে তার কাছ থেকে তার সর্বোচ্চ Potentiality কখনই বের হয়ে আসবে না। তাই একজন Leader হতে হলে নিজের উপর অর্পিত কাজগুলোকে এমন ভাবে সম্পন্ন করতে হবে যেন সেটি একটি Model বা Referance হিসেবে আজীবন System এর মধ্যে রয়ে যায়। যার ফলে সেই ব্যক্তিকে ঐ কাজটি কখনো কাউকে সময় নষ্ট করে শেখানো লাগবে না। System থেকে যে কেউ সেই কাজটি দেখে নিয়ে নিজে নিজে শিখে তা বাস্তবায়ন করতে পারবে। আর এভাবে যখন কেউ তার কাজগুলোকে Model আকারে তৈরী করে যাবে তখন কোম্পানীও তার প্রতি ভরসা পাবে তাকে বর্তমান অবস্থান থেকে আরো উচ্চ অবস্থানে Transfer করতে। মূলত কোম্পানীর উর্ধতন কর্মকর্তারা কাউকে Transfer বা Promotion দেবার সময় একটি বিষয় চিন্তা করেন যে, উক্ত Employee এর অবর্তমানে তার Positionটির কাজ গুলো নতুন কেউ এসে ঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে কিনা। এমন অবস্থায় উক্ত Employee যদি নিজেই তার কোম্পানীকে নিশ্চিত করতে পারে যে System এ তার সব কাজ গুলো Automated থাকার কারণে তার অবর্তমানে যেই তার পদে আসুক, কোম্পানীর কাজে কখনই কোন ব্যাঘাত ঘটবে না তবেই একমাত্র কোম্পানী খুশি মনে তাকে তার কাংক্ষিত Position প্রদান করতে মোটেই দেরি করবে না। আর এই Promotion পাবার জন্য কোন Employeeকে HR এর নিয়ম অনুযায়ী ৩/৪ বছর অপেক্ষাও করতে হবে না। কেউ যদি তার চাকরীতে যোগদানের অল্প সময়ের মধ্যেই নিজেকে কোম্পানীর নিকট তার কাজের দ্বারা যোগ্য ও মূল্যবান হিসেবে প্রমাণ করতে পারে তবে কোম্পানীও তাকে সময়ের আগেই Promotion, Increment প্রদান করবে।
Conclusion
অর্থাৎ সব মিলিয়ে কেউ যদি পরিশ্রমী, মেধাবী ও সেই সাথে উদ্যোগী হয় তবে কোন কোম্পানীতেই তার সাফল্য কখনো থেমে থাকবে না। একটি বিল্ডিং এর মাটির নিচের ভিত্তি যত শক্তিশালী হয়, তার উপরে তত বেশী ফ্লোর তৈরী করা যায়। ঠিক এভাবেই যে সকল Employee তাদের কাজ, অধ্যবসায় ও সততা দ্বারা একটি সিঁড়ি ধাপে ধাপে বেয়ে ওঠার মত করেই নিজেকে ধীরে ধীরে শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে গড়ে তোলে, সে একদিন বিনা বাধায় সিঁড়ির সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌছাবেই। এমন মানুষকে কখনই কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। সে তার চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌছাবেই আর এর জন্য পরিশ্রমের পাশাপাশি উচ্চাকাংক্ষী হওয়াটা অনেক বেশী জরুরী কারণ শুধুমাত্র মেধা ও পরিশ্রম জীবনে সফলতার জন্য যথেস্ট নয়। মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে একজন মানুষ একটি ভাল অবস্থানে যেতে পারে কিন্তু তার যদি এর থেকেও ভাল অবস্থানে যাবার ক্ষুধা না থাকে তবে সে কখনই সফলতার সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌছাতে পারবে না।