Read & understand the holy book which our Creator gave to us

Read & understand the holy book which our Creator gave to us

পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকেই ছোট থেকে বড় হবার পর্যায়ক্রম জীবনচক্রে নানান রকম জ্ঞান অর্জন করতে হয় আর এই জ্ঞান অর্জনের সব থেকে প্র্ধান মাধ্যম হচ্ছে বই পড়া। বর্তমান সময়ে আমরা সকলেই কম বেশী বই পড়ে থাকি। সেটা হতে পারে স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বা শখের বশে বিনোদনের উদ্দেশ্যে মনের খোরাক মেটানোর জন্য। অনেকেই আবার গর্ব করে বলে থাকে যে, আমার কাছে বিভিন্ন বইয়ের অনেক রকম কালেকশন আছে বা আমরা অনেকেই আবার বই বা লাইব্রেরী পিছনে রেখে বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলতে বা সাক্ষাৎকার দিতেও পছন্দ করি। অর্থাৎ আমরা বই পড়ি বা না পড়ি আমরা সবাইকে দেখাতে পছন্দ করি যে আমরা কত পড়ুয়া বা জ্ঞানী যেহেতু বইকে জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।

কিন্তু আমরা কি সত্যিই বই পড়ার অভ্যাসটিকে আমাদের মাঝে ধারণ করতে পেরেছি ? প্রাতিষ্ঠানিক বই আমাদের সকলকেই পড়তে হয়েছে ও দরকারে পড়তে হয়। সাহিত্যের বই কম বেশী আমরা সময় করে অনেকেই নিজ নিজ পছন্দ অনুযায়ী পড়ে থাকি কিন্তু আমাদের সকল অবহেলা এসে জমা হয়ে আছে আমাদের নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থের প্রতি। প্রতিটি মানুষ কোন না কোন ধর্মের মাধ্যমে কোন না কোন একটি পরিচয় নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। আমরা আমাদের নিজ নিজ ধর্ম সম্পর্কে বেসিক বিষয় গুলো জন্মের পর থেকে আমাদের পরিবার থেকেই পেয়ে যাই বলে ধর্ম নিয়ে আরো গভীর ভাবে কোন কিছু জানার আগ্রহ আমাদের মাঝে কাজ করে না। ধর্মীয় কোন রীতি-নীতি বা নিয়ম-কানুন নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগলে আমরা পরিবার, গুরুজনদের কাছ থেকে জেনে নেই কিন্তু সেই জ্ঞান সঠিক কিনা সেটা যাচাই করতে কখনো আমরা আমাদের ধর্মগ্রন্থ খুলে দেখি না। কেন যেন ধর্মগ্রন্থের প্রতি আমাদের সর্বদাই একটা ভয় ও ভক্তি কাজ করে যার ফলে আমরা সেগুলো কাপড়ে মুড়িয়ে সযত্নে উচু আলমারির উপরে সকলের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রেখে দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

অথচ মহান আল্লাহ কোরানকে মানুষের জন্য একমাত্র ও সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন বিধান হিসেবে নাযিল করেছেন যেন মানুষ কোরান পড়ে সেখান থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানকে নিজেদের জীবনে কাজে লাগাতে পারে। কোরান পৃথিবীর সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থ, এর পরে আর কোন ধর্মগ্রন্থ ও নবী-রাসূল আসবে না। সুতরাং আমাদের জীবনের যাবতীয় সকল সমস্যার সমাধান আমরা কোরানের মাঝেই পেয়ে যাবো। কিন্তু আমরা কতজন কোরান পড়ি ? হ্যা, অনেকেই হয়তো বলতে পারেন যে তারা নিয়মিত কোরান তেলাওয়াত করেন। কিন্তু শুধু রিডিং পড়াটাই সব কিছু নয়। যারা কোরানকে বোঝার চেষ্টা করেন তারা জানেন যে, কোরানে বিজ্ঞান, রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ন্যায়-নীতি, আইন-কানুন সব কিছু সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে। কোরান শুধু মাত্র ইসলামেরই উৎস নয়, বরং কোরান হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে পূর্বে নাযিলকৃত সকল আসমানী কিতাব, অন্যান্য ধর্মের উৎস, পূর্বের নবী-রাসূলদের ইতিহাস উল্লেখ করা রয়েছে যা অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে লেখা নেই। অর্থাৎ কোরান হচ্ছে সেই পূর্ণাংগ গ্রন্থ যেখান থেকে সকল স্তরের মানুষেরা নিজ নিজ চাহিদামত জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। অথচ এই কোরানকে অর্থ সহ পড়ে সেখানকার জ্ঞান গুলো কত জন বোঝার চেষ্টা করেন ?

আফসোসের বিষয় হচ্ছে ইসলামকে যারা মানে না ও বিশ্বাস করে না সেই বিধর্মী ও ইহুদীরাই আজ কোরানকে নিয়ে গবেষনা করে এর ভিতরকার গুপ্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে চলে যাচ্ছে পৃথিবীর শীর্ষে। অথচ আমরা মুসলিমরাই কোরানকে ভয় ও ভক্তি করে দূরে সরিয়ে রেখেছি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ থেকে। আর এই কারণেই একদা মুসলমানদের জ্ঞান-বিজ্ঞান-সাহিত্য ও রাজনীতিতে যে স্বর্ণযুগ ছিল সেই যুগ আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই, শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্যই নয়; যে কোন ধর্মের মানুষদের জন্য তাদের ধর্মের সকল জ্ঞান সম্পর্কে পূর্ণাংগভাবে জানার জন্য নিজ নিজ ধর্ম গ্রন্থ পড়া ও বোঝা অত্যান্ত জরুরী। এতে করে দীর্ঘ দিন ধরে মনের মাঝে বিশ্বাস করা সকল কু-সংস্কার, পুরনো রীতি-নীতি ও ধর্মীয় গোঁড়ামীর অবসান ঘটে ও নিজ ধর্মের বিস্তারিত জ্ঞান আহরণের জন্য আরো পিপাসা তৈরী হয়। অতঃপর, নিজ নিজ ধর্ম নিয়ে পড়ার পর যদি কারো মনে হয় যে, অন্য ধর্ম সম্পর্কেও জানা উচিত তখন তার অন্য ধর্ম সম্পর্কে জানারও আগ্রহ তৈরী হয়। আর এভাবেই সকল প্রকার ধর্মীয় ভেদাভেদ ও রেষারেষি দূর হয়ে মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয় একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভাতৃত্ববোধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *